করোনা ভাইরাস !! সব কিছু একসাথে
নিচু মানসিকতা পরিহার করুন। জনস্বার্থে শেয়ার করুন।
ইমার্জেন্সি হটলাইন নম্বরসমূহ :
01550064901-5, 01401184551, 01401184554, 01401184555, 01401184556, 01401184559, 01401184560, 01401184563, 01401184568, 01937-110011, 01937-000011, 01927-711784, 01927-711785
গুরুত্বপূর্ণ লিংকসমূহ :
করোনা ভাইরাসের লক্ষণসমূহ :
১. ভাইরাস শরীরে ঢোকার পর সংক্রমনের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় ২-১৪ দিন সময় লাগে
২. বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রথম লক্ষণ জ্বর।
৩. এছাড়া শুকনো কাশি/গলাব্যাথা হতে পারে।
৪. শ্বাসকষ্ট নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে।
৫. অন্যান্য অসুস্থতা (ডায়াবেটিস/উচ্চ রক্তচাপ/শ্বাসকষ্ট/হৃদরোগ/কিডনী সমস্যা/ক্যান্সার ইত্যাদি) থাকলে অরগ্যান ফেইলিয়র বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হতে পারে।
প্রতিকার :
১. এই ভাইরাসের কোন টিকা/ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি।
২. লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে।
প্রতিরোধ :
১. ঘনঘন সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। (কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড যাবৎ)
২. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা যাবেনা
৩. কাশি শিষ্টাচার মেনে চলুন (হাঁচি কাশির সময় বাহু/টিস্যু/কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন)
৪. অসুস্থ মানুষ, পশু ও পাখির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
৫. মাছ, মাংশসহ সব ধরণের খাবার সিদ্ধ (৭০ ডিগ্রি এর উচ্চতাপে) করে নিন।
৬. ফুটানো পানি পান করুন।
সন্দেহভাজন রোগীর জন্য করণীয় :
১. অসুস্থ রোগীকে ঘরে থাকা নিশ্চিত করুন।
২. মারাত্মক অসুস্থ রোগীকে নিকটস্থ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
৩. রোগী অবশ্যই নাক মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করবে।
৪. করোনা কন্ট্রোল রুম ও হটলাইন নাম্বারে ফোন করুন।
কখন মাস্ক ব্যবহার করবেন?
· যখন কোন সুস্থ ব্যাক্তি করোনা আক্রান্ত কোন রোগীর পরিচর্যা করবেন তখন মাস্ক পড়তে হবে।
· হাঁচি, কাশি ও সর্দি হলে মাস্ক পড়তে হবে।
· যানবাহনে ভ্রমনে সতর্কতার জন্য মাস্ক পড়া যেতে পারে।
· করোনা আক্রান্তদের মাস্ক পড়িয়ে রাখতে হবে যাতে তাদের থেকে অন্য কারো না ছড়ায়।
মাস্ক ব্যবহারে সতর্কতা
· মাস্ক ব্যবহারের আগে অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ডওয়াশ অথবা সাবান পানি দিয়ে ভালভাবে হাত ধুতে হবে।
· মাস্ক পড়ে মুখ এবং নাক ভালভাবে ঢাকতে হবে যাতে মাস্ক এবং মুখের মাঝখানে কোন ফাঁকা জায়গা না থাকে।
· মাস্ক ব্যবহারকালে হাত দিয়ে স্পর্শ করা যাবে না- যদি হাত দিতেই হয় তাহলে অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ডওয়াশ অথবা সাবান পানি দিয়ে ভালভাবে হাত ধুয়ে নিন।
· যখনই একটা মাস্ক নষ্ট হবে তখনই নতুন একটা ব্যবহার করতে হবে। অন টাইম মাস্ক দু’বার ব্যবহার করা যাবে না।
· মাস্ক খোলার আগে ও পরে ভালভাবে হাত ধুতে হবে।
কোয়ারান্টাইন কি
যারা কোন সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে এসেছেন তাদের অন্য সুস্থ ব্যক্তিদের থেকে আলাদা রাখাই হলো কোয়ারান্টাইন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণকাল ১৪ দিন পর্যন্ত। তাই যারা সংক্রমিত ব্যক্তি বা দেশ থেকে ফিরেছেন তারা অবশ্যই ১৪ দিন কোয়ারান্টাইন পালন করবেন।
আইসোলেশন কি?
‘আইসোলেশন এর মাধ্যমে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত অসুস্থ ব্যক্তিদের অন্য সুস্থ ব্যক্তিদের আলাদা রাখা হয়।
হোম কোয়ারান্টাইন কি আর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন কি?
যদি কেউ বাড়িতে কোয়ারান্টাইন পালন করে তাকে বলে হোম কোয়ারান্টাইন। আর যদি কোন প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এর অধীনে কোয়ারান্টাইন করে তবে তাকে বলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন।
হোম কোয়ারান্টাইন বা স্বেচ্ছা কোয়ারান্টাইন এর নিয়মাবলি
· অত্যাবশ্যকীয়ভাবে নিজ বাড়িতে থাকুন।
· হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেওয়া ব্যতীত বাড়ির বাইরে যাবেন না।
· বাড়ীর বাইরে কাজে, স্কুল, কলেজ বা জনসমাগমে যাবেন না।
· বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে নিজেকে আলাদা রাখুন।
· ঘুমানোর সময় আলাদা ঘরের ব্যবস্থা না থাকলে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে ঘুমানোর জন্য পৃথক বিছানা ব্যবহার করুন।
· সম্ভব হলে আলাদা গোসলখানা ও টয়লেট ব্যবহার করুন।
· শিশুকে বুকের দুধ খেতে দিন। শিশুর কাছে যাওয়ার সময় মাস্ক পরিধান করুন ও সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
· সাবান পানি ব্যবহারের পর টিস্যু দিয়ে হাত মুছে ফেলুন। টিস্যু না থাকলে নির্দিষ্ট গামছা বা তোয়ালে দ্বারা মুছে ফেলুন। এবং নিয়মিত গামছা ও তোয়ালে পরিষ্কার করুন।
· সংক্রমিত ব্যক্তির খাওয়ার বাসনপত্র – থালা, গ্লাস, কাপ এবং তোয়ালে, বিছানার চাদর অন্য কারো সাথে ভাগাভাগি করবেন না।
কখন কোয়ারান্টাইন এর সময়সীমা শেষ হবে?
· চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কোয়ারান্টাইন এর সময়সীমা শেষ হবে। তবে সেই সময়সীমা কমপক্ষে ১৪ দিন হতে হবে।
কোয়ারান্টাইন এ থাকাকালীন কি কি করা যাবে?
· পরিবার ও বন্ধু বান্ধবের সাথে ফোন, মোবাইল বা ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ রাখতে পারেন।
· শিশুদেরকে পর্যাপ্ত খেলনা সামগ্রী দিন এবং খেলার পর খেলনাগুলো জীবাণুমুক্ত করুণ।
· আপনার দৈনন্দিন রুটিন – খাওয়া, দাওয়া ও হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে।
· সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিসের কাজ বা ক্লাস করা যেতে পারে।
পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য নির্দেশনাবলী
ü যিনি কোয়ারান্টাইনে আছেন তার ঘরে থাকা নিশ্চিত করুন।
ü বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং যার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার, অ্যাজম্যা প্রভৃতি নেই তিনি পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়োজিত হবেন।
ü কোন অতিথি কোয়ারান্টাইনে থাকা ব্যক্তির সাথে দেখা করতে পারবেন না।
কখন হাত সাবান পানি দিয়ে ধুবেন:
· কোয়ারান্টাইনে থাকা ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে বা তার ঘরে ঢুকলে
· খাবার তৈরির আগে ও পরে
· খাবার আগে
· টয়লেট ব্যবহারের পর
· গ্লাভস পড়ার আগে ও পরে
· যখনই হাত নোংরা মনে হয় তখনই
ü খালি হাতে ঘরের কোন কিছু স্পর্শ করা যাবে না।
ü কোয়ারিন্টাইনে থাকা ব্যক্তির ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, টিস্যু ইত্যাদি ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে রাখুন । এসব ময়লা খোলা জায়গায় না ফেলে পুড়িয়ে ফেলুন।
ü কোয়ারান্টাইনে থাকা ব্যক্তির ব্যবহৃত নিজের কাপড় নিজেকেই গুড়া সাবান অথবা কাপড় কাচা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে বলুন।
ü যদি কোয়ারান্টাইনে থাকাকালীন কোন করোনা ভাইরাসের কোন উপসর্গ (১০০ডিগ্রি ফারেনহাইট/কাশি/সর্দি/গলাব্যথা/শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় তবে অতি দ্রুত- আইইডিসিআর এর হটলাইন নম্বরে (01550064901-5, 01401184551, 01401184554, 01401184555, 01401184556, 01401184559, 01401184560, 01401184563, 01401184568, 01937-110011, 01937-000011, 01927-711784, 01927-711785) অবশ্যই যোগাযোগ করুন এবং পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন।
করোনা নিয়ে প্রশ্নোত্তর
১. পশুপাখি থেকে কি করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে?
· পশু পাখি এই ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হয় এরকম প্রমাণ এখনো মিলেনি, তবে পশু পাখি থেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
· পশু পাখির সংস্পর্শে আসার পর সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে।
২. শুধু বয়স্করাই কি আক্রান্ত হবে নাকি তরুণরাও?
· যেকোনো বয়সের ব্যক্তি নভেল করোনা দিয়ে আক্রান্ত হতে পারে।
· তবে বয়স্ক এবং যাদের আগে থেকে অসুস্থতা ছিল তারা মারাত্মক ঝুকিতে
৩. অ্যান্টি বায়োটিক কি করোনায় কার্যকরী?
· না, অ্যান্টিবায়োটিক ভাইরাসের বিরুদ্ধে নয়, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকরী।
· ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা উচিত হবে না।
· কেউ করোনা দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পরে আবার ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সহ-সংক্রমিত হলে অ্যান্টিবায়োটিক পেতে পারেন।
৪. করোনা ভাইরাসের কোন নির্দিষ্ট ওষুধ আছে কিনা?
· না, এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। তবে লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া যাবে।
৫. সংক্রমিত দেশ থেকে কোন পাশ্বেল আসলে তা কি নিরাপদ?
· হ্যাঁ, নিরাপদ।
· ইতিমধ্যেই WHO গবেষণা করে বের করেছে যে এই ভাইরাস মানবদেহের বাইর বেশিক্ষণ বাচে না। তাই বিদেশ থেকে পার্শ্বেল আসতে যেহেতু অনেক সময় লাগে তাই তাতে ভাইরাস থাকবে না।
৬. করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন এর কোন ভূমিকা আছে কি?
· না নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন করোনা ভাইরাসে কাজ করবে না। কারণ এটি সম্পূর্ণ নতুন ভাইরাস।
৭. রসুন খাওয়া কি করোনা ভাইরাসে কাজ করবে?
· রসুন করোনা ভাইরাসে কার্যকর এমন কোন প্রমাণ এখনো মেলেনি। তবে রসুনে অনেক জিবাণু নাশক গুণাগুণ আছে।
৮. তেল মাখলে কি করোনা ভাইরাস ঢুকতে পারবে?
· না তেল করোনা ভাইরাসকে ধ্বংস করে না।
· রাসায়নিক জীবাণুনাশক যেমন- ব্লিচিং পাউডার/ক্লোরিন ভিত্তিক জীবাণু নাশক, ইথার দ্রবণ ৭৫% ইথানল, প্যারাসেটিক অ্যাসিড, ক্লোরোফর্ম ইত্যাদি বস্তুর উপরিভাগ থেকে করোনা ভাইরাসকে মেরে ফেলতে সক্ষম। বাড়িঘর, আসবাবপত্র, দোকানপাট, যানবাহন এটি দিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে।
৯. মাউথওয়াশ দিয়ে কুলি করলে কি করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকা যাবে?
· এরকম কোন প্রমাণ এখনো মেলেনি। তবে মাউথওয়াশ করলে অন্যন্য অনেক জীবাণু থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
১০. স্যালাইন দিয়ে নাক পরিষ্কার করলে কি নতুন করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব?
· এ ব্যাপারে নিশ্চিত কোন প্রমাণ নেই। তবে স্যালাইন দিয়ে নাক পরিষ্কার করলে দ্রুত সাধারণ ঠান্ডা থেকে উপশম হয়।
১১. ‘হ্যান্ড ড্রায়ার’ কি নতুন করোনা ভাইরাস ধ্বংসে কার্যকরী?
· না ‘হ্যান্ড ড্রায়ার’ করোনা ভাইরাস ধ্বংসে কার্যকরী নয়।
· সুরক্ষার জন্য হাত বার বার সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং টিস্যু, পরিষ্কার কাপড়, অথবা ‘এয়ার ড্রায়ার’ দিয়ে শুকিয়ে নিতে পারেন।
১২. আলট্রাভায়োলেট ল্যাম্প কি করোনা ভাইরাস ধ্বংসে কার্যকরী?
· শরীরে আলট্রাভায়োলেট ল্যাম্প ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে ত্বকের সমস্যা হতে পারে। তবে বস্তুর উপর প্রয়োগ করা যেতে পারে।
১৩. মশার কামড়ে করোন ভাইরাস ছড়ায় কিনা?
· মশার মাধ্যমে ছড়ায় কিনা এখনো প্রমাণ মেলেনি। যেহেতু মশা অন্যন্যা রোগের জীবাণু বহন করতে সক্ষম তাই করোনা ভাইরাসকেও বহন করতে পারে। তাই সতর্ক থাকতে হবে।
১৪. করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা কি বাংলাদেশে হয়?
· হ্যা, বাংলাদেশে হয়। কেবলমাত্র আইইডিসিআর-এ এই পরীক্ষা হয়।
১৫. ডিম ও গাবাদীপশুর মাংশ কি খাওয়া যাবে?
· খাওয়া যাবে তবে ভালভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে।
১৬. করোনা ভাইরাস নিয়ে আমার কি কি করা উচিত নয়?
· ধুমপান করা যাবে না
· দেশীয় ভেষজ ঔষধ খাওয়া যাবে না।
· নিজে নিজে ঔষধ, বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা যাবে না।
Travel Advice for International Traveler