ফেরেশতারা নুরের তৈরি - ইসলামিক গল্প

0

ফেরেশতারা নুরের তৈরি
ফেরেশতারা নুরের তৈরি

ফেরেশতারা এলেন ঘোড়ায় চড়ে

অনেক আগের কথা। আরবে এক ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি মালামাল বেচা-কেনা করতেন। নানান দেশে সফর করতেন। তিনি ছিলেন খুবই সৎ।

মানুষকে ঠকাতেন না। আল্লাহর আদেশ মেনে চলতেন। একদিন তিনি সফরে বের হলেন। মাল-পত্র ও টাকা-পয়সা তার সাথেই ছিল। কিছুদূর যেতেই তাকে ডাকাত ধরল।

লােকটি ভয় পেয়ে গেলেন। ডাকাত হুমকি-ধমকি দিয়ে বলল, তােকে আমি হত্যা করব। তাের সমস্ত সম্পদ আমি নিয়ে যাব। হা-হা-হা।”

তিনি কাকুতি-মিনতি করলেন। কিন্তু ডাকাতটা কোনাে কথাই শুনল না। শেষমেশ তিনি বললেন, ‘ভাই! আমার কাছে যা আছে, সব নিয়ে যাও।

কিন্তু আমাকে জানে মেরাে না। আমাকে ছেড়ে দাও। ডাকাত বলল, 'হা-হা-হা! তাের সম্পদ তাে নেই! তােকেও শেষ করব।'

তিনি অনুনয়-বিনয় করলেন। সম্পদের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দিতে বললেন। কিন্তু কোনাে কাজ হলাে না। ডাকাতটা ওর সিদ্ধান্তেই অটল রইল।

তিনি তখন বলল্লেন, 'ভাই! একটা অনুরােধ। মারার আগে আমাকে একটা সুযােগ দিতে হবে। ডাকাত বলল, কী সুযােগ চাস, বল?” তিনি বললেন, 'আমাকে দুই রাকাত নামাজ পড়ার সুযােগ দাও।'

ডাকাত বলল, “মরবিই যখন—যত ইচ্ছা নামায পড়। আজ আমার হাত থেকে তােকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। আমি তােকে শেষ করে দেব। হা-হা-হা।'

তিনি দুই রাকাত নামাজ পড়লেন। খুব মনযােগ দিয়ে নামাজ শেষ করলেন।

তারপর আল্লাহর দরবারে দু হাত তুলে দুআ করে বললেন, 'ওগাে দয়াময়! ওগাে মহান আরশের প্রভু! তুমি যা ইচ্ছা তাই তাে করতে পারাে। তুমি আমাকে এই ডাকাত থেকে হেফাজত করাে।

হে সাহায্যকারী! তুমি আমাকে সাহায্য করাে। হে আমার প্রভু! আমাকে দয়া করাে।'

তিনি কেঁদে কেঁদে এভাবেই আল্লাহর কাছে মুনাজাত করতে থাকলেন। এমন সময় ঘােড়ার আওয়াজ শােনা গেল।


তিনি তাকিয়ে দেখলেন, একলােক ঘােড়া হাঁকিয়ে আসছে। হাতে তার বর্শা। কিছু বােঝার আগেই লােকটি ডাকাতকে বর্শা ছুড়ে মারলেন। বর্শার আঘাতে ডাকাতটি

মরে গেল।


তিনি সেই লােকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আল্লাহ তাআলা আপনার মাধ্যমে আমাকে সাহায্য করেছেন। কিন্তু কে আপনি?” অপরিচিত লােকটি বললেন, “আমি চতুর্থ আকাশের ফেরেশতা। তুমি যখন সাহায্যের জন্য প্রথমবার আল্লাহকে ডাকলে, আমি আকাশের দরজায় ঠকঠক আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম।


তুমি যখন দ্বিতীয়বার ডাকলে, আমি আকাশবাসীদের মাঝে একধরনের শােরগােল শুনতে পেলাম। যখন তুমি তৃতীয়বার আল্লাহকে ডাকলে তখন বলা হলাে, ডাকটি কোনাে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির।

তখনই আমি আল্লাহর কাছে এই ডাকাতকে হত্যার অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন।


বন্ধুরা! একটু চিন্তা করাে। ওই ব্যবসায়ীর কত বড় বিপদ হতে যাচ্ছিল। তার আশেপাশে সাহায্য করার মতাে কেউই ছিল না।

কোনাে অস্ত্রও ছিল না তার কাছে। নিশ্চিত মৃত্যুর মুখােমুখি দাঁড়িয়ে ছিল সে। কিন্তু তবুও সে রেহাই পেল।

কেন?

কারণ, সে মনেপ্রাণে আল্লাহর কাছে দুআ করেছিল। একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চেয়েছিল। তাই আল্লাহ তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন। ফেরেশতা পাঠিয়ে সাহায্য করেছিলেন।


অহ! যে ব্যবসায়ীর ঘটনা তােমাদের শােনাচ্ছি, তার নামটিই তাে বলা হলাে না। তার নাম ছিল আবু মাকাল আনসারি । তিনি ছিলেন আল্লাহর রাসূলের একজন সাহাবি।


জমিনের বুকে অসংখ্য ফেরেশতা নিয়ােজিত আছেন। তাঁরা মুসলিমদের সাহায্য করেন। আল্লাহর হুকুমে বিপদ-আপদ থেকে উদ্ধার করেন।

আর প্রত্যেক মানুষের কাঁধে দুজন ফেরেশতা নিয়ােজিত আছেন। তাঁরা হলেন কিরামান-কাতিবীন। ডান কাঁধে যিনি আছেন, তিনি ভালাে আমল ও ইচ্ছাগুলাে লিপিবদ্ধ করেন। আর বাম কাঁধের ফেরেশতা খারাপ আমল লিপিবদ্ধ করেন।









Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)